রাজধানীর যাত্রাবাড়ী ও দনিয়াসহ ঢাকা দক্ষিণের বিভিন্ন এলাকায় সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একাধিক পোস্ট, ছবি ও লিখিত অভিযোগে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতার বিরুদ্ধে সন্ত্রাস, মাদক চোরাচালান, অবৈধ অর্থ আদান–প্রদান এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের ওপর হামলা পরিচালনার অভিযোগ উঠেছে৷
প্রকাশিত অভিযোগ অনুযায়ী মূল অভিযুক্ত –আলী আসরাফ ভূইয়া (শাওন) নামে এক ব্যক্তি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন পোস্টে দেখা গেছে— তিনি অতীতে ৬১ নং ওয়ার্ড যাত্রাবাড়ী থানা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন, পরবর্তীতে দল নিষিদ্ধ হওয়ার পরও সংগঠনের প্রভাব ব্যবহার করে এলাকায় আধিপত্য কায়েম করার চেষ্টা অস্ত্র হাতে ছবি প্রকাশ,বিদেশে অবস্থান করে সরকারের বিরুদ্ধে প্ররোচনামূলক বক্তব্য প্রচার,এবং স্থানীয় প্রতিপক্ষকে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগও যুক্ত হয়েছে৷
প্রবাস থেকে অপরাধচক্র পরিচালনার অভিযোগ :বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে প্রকাশিত স্ট্যাটাসগুলোতে দাবি করা হয়েছে—অভিযুক্ত ব্যক্তি বিদেশে অবস্থান করে দেশে অবস্থানরত সহযোগীদের অর্থায়ন, নির্দেশনা এবং উসকানি দিয়ে যাচ্ছে৷
প্রকাশিত এক পোস্টে বলা হয়: “তিনি অর্থদাতা, পরামর্শদাতা ও নির্দেশদাতা হিসেবে বিভিন্ন অপরাধে যুক্ত, এবং তার বিরুদ্ধে কথা বললেই হত্যার হুমকি দেওয়া হয়৷”এমনকি একাধিক পোস্টে উল্লেখ করা হয়েছে যে অভিযুক্তের বিদেশে ইউরো ও ডলারের পূর্ণ বান্ডিলসহ ছবি, ওয়ার্ডভিত্তিক রাজনৈতিক অফিসে তোলা দলীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সাথে ছবি যা তার অবৈধ অর্থনৈতিক নেটওয়ার্কের ইঙ্গিত দেয়৷
অস্ত্র হাতে ছবি নিয়ে জনমনে উদ্বেগ : সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ছবিতে দেখা যায়—
অভিযুক্ত ব্যক্তি প্রকাশ্যে একটি স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র হাতে দাঁড়িয়ে আছেন, যার নিচে লেখা রয়েছে “ অস্ত্র হাতে শাওন। স্থানীয়রা বলছেন, ছবিটি তার অতীত সশস্ত্র কর্মকাণ্ডের প্রমাণ বহন করে এবং এলাকায় আতঙ্কের কারণ৷
ইয়াবা ও চাঁদাবাজি চক্রের সাথে সম্পৃক্ততার অভিযোগ : প্রকাশিত একাধিক অভিযোগে দাবি তিনি দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসায়ীদের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক, রাজনৈতিক পদবী ব্যবহার করে চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও হামলাকারী দল পরিচালনা,শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি প্রদর্শন৷
একটি ভাইরাল স্ট্যাটাসে উল্লেখ আছে: “তার ক্ষমতার অপব্যবহার করে এলাকায় সিলিন্ডার গ্যাসের অবৈধ ব্যবসা,স্থানীয় টেন্ডার, মাদক ও অস্ত্র চোরাচালানে যুক্ত ছিল৷ বিভিন্ন অবৈধ কর্মকাণ্ডে সে সফলভাবে জড়িত ছিল৷”
স্থানীয় ফেসবুক কমিউনিটি “আমরা যাত্রাবাড়ী কাজলা পরিবার”–এ প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়: অভিযুক্তকে দ্রুত দেশে ফিরিয়ে এনে আইনের আওতায় আনা,তার অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের তদন্ত এবং সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়েছে৷
এতে আরও বলা হয়: “সরকার ও প্রশাসনের প্রতি আমাদের আহ্বান—এ ধরনের অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হোক৷”
এছাড়াও সংগঠন নিষিদ্ধ হওয়ার পর এর পুরনো নেতাদের বিরুদ্ধে যে দমন-পীড়ন চলছে এবং তাদের বিরুদ্ধে নতুন নতুন অভিযোগ উঠছে তা অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক সহিংসতার সম্ভাব্য ঝুঁকি হিসেবে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনে আলোচিত।